![]() |
LIONEL MESSI |
আপনারা কি জানেন এ কিংবদন্তির পুরো নাম কি ?
এ কিংবদন্তির নামঃ লিওনেল আন্দ্রেস মেসি কুচেত্তিনি (Lionel Andrés Messi Concettina)
লিওনেল মেসি ১৯৮৭ সালের ২৪ জুন ,রোসারিও, আর্জেন্টিনায় জন্মগ্রহণ করেন ।তার বাবার নাম হলো হোর্হে হোরাসিও মেসি (Jorge Horacio Messi) এবং তাঁর মায়ের নাম হলো সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিত্তিনি (Celia María Concettina)
মেসির পেশাদার ক্যারিয়ারের একটি বড় অংশ কেটেছে স্পেনের বিখ্যাত ক্লাব এফসি বার্সেলোনায়। তিনি ১৩ বছর বয়সে ক্লাবের বিখ্যাত যুব অ্যাকাডেমি 'লা মাসিয়া'-তে যোগ দেন। মেসি একজন দুর্দান্ত আক্রমণভাগের খেলোয়াড় (Forward) এবং সৃজনশীল প্লেমেকার (Creative Playmaker) তাঁর ড্রিবলিং, গতি, নিখুঁত শট ও পাস দেওয়ার ক্ষমতা তাঁকে বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত করেছে। ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে একার পক্ষে গোল করার অবিশ্বাস্য ক্ষমতা তাঁকে অনন্য করে তোলে।
মেসির ক্লাব ক্যারিয়ার শুরু হয় বার্সেলোনার হাত ধরে (২০০০-২০২১) । তিনি বার্সেলোনার হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ (৭৭৮) খেলা ও সবচেয়ে বেশি গোল (৬৭২) করার রেকর্ড গড়েছেন।
বার্সেলোনার হয়ে তিনি ৩৫টি শিরোপা জিতেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— ১০টি লা লিগা এবং ৪টি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ।
এরপরে , ২০২১ সালে তিনি দুই বছরের জন্য ফরাসি ক্লাব পারি সাঁ-জেরমাঁ (PSG)-তে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি আমেরিকান ক্লাব ইন্টার মায়ামির (Inter Miami) হয়ে খেলছেন।
লিওনেল মেসির অভিষেকঃ
লিওনেল মেসির অভিষেক হয় ২০০৫ সালের ১৭ ই আগস্ট । লিওনেল মেসির অভিষেক ম্যাচটি ছিল একটি নাটকের মতো । বদলি হিসেবে নামার মাত্র ৪৭ সেকেন্ডের মাথায় লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল । এ ম্যাচটি হয়েছিল হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে ।
লিওনেল মেসির অর্জন ঃ
লিওনেল মেসির ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিক স্বর্ণপদকের মাধ্যমে আর প্রথম ্ট্রফি অর্জন করেন ।
লিওনেল মেসির ২য় অর্জন শুরু হয় ২০০৯ সালে ব্যালন ডি'আর পুরষ্কারে মাধ্যমে । তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২২ বছর । এখন পর্যন্ত তিনি মোট ৮ টি ব্যালন ডি'আর জয় করেন ।
তিনি ২০১৪ ও ২০২২ সালে বিশ্বকাপ গোল্ডেন বল পুরস্কার জেতা একমাত্র খেলোয়াড় হয়ে উঠেন ।
তিনি ২০২১ ও ২০২৪ সালে কোপা আমেরিকা জয় করেন ।
ইউরোপীয় গোল্ডেন শু (European Golden Shoe): ইউরোপের শীর্ষ লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে ৬ বার জিতেছেন।
লিওনেল মেসি নিজের নামে একটি রের্কডও করে রাখেন । এক পঞ্জিকাবর্ষে ক্লাব ও দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৯১ গোল করার বিশ্ব রেকর্ড যেটি একমাত্র তার অধিনে । লা লিগায় সর্বোচ্চ গোলের (৪৭৪) রেকর্ড।
পেশাদার ফুটবলে সর্বোচ্চ সংখ্যক ট্রফি (৪৬টি) জয়ী খেলোয়াড়দের একজন।
এতো কিছু অর্জন কি একজন ফুটবলারকে কিংবদন্তি করে তুলতে পারে ?
অবশ্যই না । আরো একটি অর্জন দরকার । যেটি প্রতিটি ফুটবলারের স্বপ্ন ।
জানেন কি তার নাম ?
তার নামঃ ফিফা বিশ্বকাপ জয় ।
কিংবদন্তি মারাদোনার ৩৬ বছর আগে, ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন। এরপর ৩৬ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও আর্জেন্টিনার আর কোন বিশ্বকাপ জিতা হয়ে উঠেনি । সবার মনে একটাই প্রশ্নঃ লিওনেল মেসি কি পারবেন আরো একটি বিশ্বকাপ এনে দিতে । ২০১৪ সালে ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে যাওয়ার পরে সবাই তো হাল ছেড়েই দিয়েছিল । সবাই মনে করেছিলেন আর মনে হয় না মেসি তার জীবনে কোন দিন বিশ্বকাপ জিততেও পারবে । কিন্তু একজন ভেবেছিলেন ২০১৪ সালের সেই ইতিহাসকে একদিন তিনি মিথ্যা প্রমাণ করবেন ।
" তিনি কি রাখতে পারবেন তাঁর কথা?"
আসুন জেনে নেয়,
একজন ফুটবলারের কিংবদন্তি হয়ে উঠার গল্পঃ
কথায় আছে জীবন নাটকের থেকেও নাটকীয় । এখন জীবন সেই নাটকেউ হার মানাবে । এখন নাটক একজনই লিখবেন তার নাম কি যান , তার নামঃ লিওনেল মেসি ।
শুরুতেই ধাক্কা ,
টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে হেরে যাওয়াটা আর্জেন্টিনার জন্য বিশাল ধাক্কা ছিল। ওই ম্যাচে মেসি পেনাল্টি থেকে প্রথম গোলটি করেছিলেন। এই হার মেসি এবং দলকে পরের ম্যাচগুলো 'ফাইনাল' হিসেবে খেলার প্রেরণা জুগিয়েছিল।
এখন একটাই লক্ষ্য জিতা ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেয় । সেই আশা নিয়ে ২য় ম্যাচের অপেক্ষায় মেসি ও তার টিম । মেক্সিকোর বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে তাঁর গোলটি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ড্র করলে বা হারলে আর্জেন্টিনার বিদায় প্রায় নিশ্চিত ছিল। তাঁর দুর্দান্ত শট আর্জেন্টিনার জয়ের পথ খুলে দেয়।
নকআউট পর্বের প্রতিটি ম্যাচে মেসি ছিলেন একজন রাজার মতো ।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাঁর গোলটি ছিল জাদুকরী, তাঁর প্রথম নকআউট গোল।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে উত্তেজনাপূর্ণ কোয়ার্টার-ফাইনালে তিনি গোল করেন এবং একটি চমৎকার অ্যাসিস্ট করেন।
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালে মেসি পেনাল্টিতে গোল করেন এবং জুলিয়ান আলভারেজকে দেওয়া অ্যাসিস্টটি ছিল শিল্পের মতো।
এখন শুধু একটি ম্যাচ , যা হয়তো বদলিয়ে দিবে না হয়তো কেড়ে নিবে সব কিছু ।
মহাকাব্যিক ফাইনালঃ
বিশ্বকাপ ফাইনালটিকে ফুটবলের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ ফাইনালগুলোর মধ্যে একটি ধরা হয়। এই ম্যাচে মেসি তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা চাপ সামলেছেন:
প্রথম গোল: ২৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে প্রথম গোল করে দলকে এগিয়ে দেন।
দ্বিতীয় গোল (অতিরিক্ত সময়): ১০৮ মিনিটে অতিরিক্ত সময়ে একটি গোল করে যখন মনে হচ্ছিল আর্জেন্টিনা জিতে যাচ্ছে, তখন কিলিয়ান এমবাপ্পে আবার গোল করে সমতা ফেরান।
পেনাল্টি শুটআউট: শুটআউটে প্রথম শটটি সফলভাবে জালে জড়িয়ে মেসিই আর্জেন্টিনাকে মানসিক শক্তি এনে দেন, যা শেষ পর্যন্ত শিরোপা জয়ে সাহায্য করে।
২০২২ সালের এই বিশ্বকাপ ছিল মেসির ফুটবল ক্যারিয়ারের চূড়ান্ত বিজয় এবং এই ৭টি গোল ছিল সেই বিজয়ের প্রধান চালিকাশক্তি।
ফুটবলের শেষ বাঁশি: কিংবদন্তির বিদায় এবং এক মহাকাব্যের সমাপ্তি
'১০'-এর বিদায়: যে জার্সিতে ইতিহাস লেখা হয়েছিল, সেই জার্সি তুলে রাখার পালা।
গোল্ডেন বল থেকে বিশ্বকাপের ট্রফি: মেসির জাদুকরী ফুটবল যাত্রা—যা অনুপ্রেরণা জোগায় বিশ্বকে!
লিওনেল মেসির এই সাফল্যের কাহিনিটি আপনার কেমন লাগলো? নীচে কমেন্ট করে আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না! আর এই আলোচনাটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। খেলাধূলা ও তারকাদের জীবনধারা সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ওয়েবসাইডের পাশে থাকুন ।"
Comments
Post a Comment